Customize Consent Preferences

We use cookies to help you navigate efficiently and perform certain functions. You will find detailed information about all cookies under each consent category below.

The cookies that are categorized as "Necessary" are stored on your browser as they are essential for enabling the basic functionalities of the site. ... 

Always Active

Necessary cookies are required to enable the basic features of this site, such as providing secure log-in or adjusting your consent preferences. These cookies do not store any personally identifiable data.

No cookies to display.

Functional cookies help perform certain functionalities like sharing the content of the website on social media platforms, collecting feedback, and other third-party features.

No cookies to display.

Analytical cookies are used to understand how visitors interact with the website. These cookies help provide information on metrics such as the number of visitors, bounce rate, traffic source, etc.

No cookies to display.

Performance cookies are used to understand and analyze the key performance indexes of the website which helps in delivering a better user experience for the visitors.

No cookies to display.

Advertisement cookies are used to provide visitors with customized advertisements based on the pages you visited previously and to analyze the effectiveness of the ad campaigns.

No cookies to display.

Take a fresh look at your lifestyle.

আবহাওয়া, জলবায়ু, পার্থক্য এবং আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণ

1,398

আবহাওয়া

আবহাওয়া বলতে স্বল্প সময়ের জন্য কোনো নির্দিষ্ট স্থানের বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা, বায়ুর চাপ, বায়ুপ্রবাহ, বায়ুর আর্দতা বা বায়ুতে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ, মেঘ ও বৃষ্টিপাতের অবস্থাকে বোঝায়।

যেমন আজকের দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এ থেকে বোঝা যায় আজকের আবহাওয়া বেশ গরম। আবার আজ বাতাসের আপেক্ষিক আর্দতা ৮৫ শতাংশ।

এ থেকে বোঝা যাবে আজ বা কাল বৃষ্টি হতে পারে। বায়ুম-লের এরকম অবস্থা-ই আবহাওয়া।

জলবায়ু

আমরা দেখেছি আবহাওয়া হলো কোনো স্থানের বায়ুমন্ডলের স্বল্প সময়ের অবস্থা, আমরা বলে থাকি আজ সকালে আবহাওয়া ঠান্ডা ছিল কিন্তু দুপরে আবহাওয়া বেশ গরম হবার সম্ভাবনা আছে।

পক্ষান্তরে, জলবায়ু হলো কোনো স্থানের অনেক বছরের আবহাওয়ার একটি সামগ্রিক গড় অবস্থা।

যেমন আমরা বলে থাকি বাংলাদেশের জলবায়ু উষ্ণ, এ থেকে বোঝা যায় বাংলাদেশে বেশ গরম পড়ে আবার রাশিয়ার জলবায়ু শীতপ্রধান – এ কথা বলতে আমরা বুঝি যে রাশিয়ায় সাধারণত খুব শীত পড়ে।

আবহাওয়া ও জলবায়ুর মধ্যে পার্থক্য:

আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদানসমূহ একই হলেও তাদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।
আবহাওয়া
১। কোনো স্থানের বায়ুম-লের স্বল্পকালীন অবস্থাই আবহাওয়া।

২। কোনো স্থানের আবহাওয়া অল্প সময়ের মধ্যে পরিবর্তিত হতে পারে।

৩। কাছাকাছি অঞ্চলের আবহাওয়া একই সময়ে ভিন্ন হতে পারে। কোনো নির্দিষ্ট দিনে রাজশাহীতে বৃষ্টি হতে পারে কিন্তু নাটোরে বৃষ্টি নাও হতে পারে।

জলবায়ু

১। কোনো স্থানের অনেক বছরের আবহাওয়ার/ বায়ুমন্ডলের গড় অবস্থাই জলবায়ু।
২। কোনো স্থানের জলবায়ু পরিবর্তন হতে পারে তবে সেটা হতে অনেক বছর লেগে যায়।
৩। কাছাকাছি অঞ্চলের জলবায়ু সাধারণত একই রকম। যেমন বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ু একই রকম।

 

আবহাওয়া, জলবায়ু,

আবহাওয়ার পরিবর্তন

বায়ুমন্ডলে বায়ুর তাপমাত্রা, বায়ুচাপ ও বায়ুতে জলীয়বাষ্পের পরিবর্তন বায়ুপ্রবাহ ইত্যাদি আবহওয়ার নিয়ামক।

এ নিয়ামকগুলো যখন পরিবর্তন হয় তখন আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটে। আর এসব নিয়ামকের পরিবর্তনে মূল ভূমিকা রাখে সূর্যতাপ।

অর্থাৎ আবহাওয়া পরিবর্তনের মূল ভূমিকা আসলে সূর্য তাপের। আমরা এখন দেখব সূর্যতাপ আবহাওয়ার উপাদানসমূহ পরিবর্তনে কীভাবে ভূমিকা রাখে।

 

সূর্যতাপের উপর তাপমাত্রার নির্ভরতা:

সূর্য থেকে আগত আলোকরশ্মির সাথে তাপও পৃথিবীতে এসে পৌঁছে। সূর্যতাপ যখন পৃথিবীপৃষ্ঠে পড়ে তখন পৃথিবীপৃষ্ঠ উত্তপ্ত হয়।

পৃথিবীপৃষ্ঠের সাথে মিশে থাকা বায়ুমন্ডলের নিচের স্তরও (ট্রপোস্ফিয়ার) এতে উত্তপ্ত হয়।

ফলে দিনের বেলায় সাধারণত আমরা বেশি গরম অনুভব করি।

রাতে যখন সূর্য অস্ত যায় তখনো পৃথিবী পৃষ্ঠ ও বায়ুম-লের নিচের স্তর গরম থাকে। কারণ দিনের বেলায় পৃথিবীপৃষ্ঠ যে তাপ পায় তা রাতের বেলায় সবটুকু চলে যেতে পারে না।

পৃথিবীপৃষ্ঠ যে তাপ বিকিরণ করে বায়ুম-লের জলীয়বাষ্প, কার্বন-ডাই অক্সাইড ইত্যাদি সেই তাপ শোষণ করে ধরে রাখে। তাই রাতের বেলাও আমরা গরম অনুভব করি।

গ্রীষ্মকালে সূর্য আমাদের মাথার উপর থেকে লম্বভাবে (খাড়াভাবে) বেশি সময় ধরে কিরণ দেয় তাই আমরা বেশি গরম অনুভব করি। প

ক্ষান্তরে, শীতকালে সূর্য অনেকটা দূর থেকে তির্যকভাবে বা বাঁকাভাবে এবং কম সময় ধরে কিরণ দেয় তাই আমরা
শীতকালে কম গরম অনুভব করি।

 

উচ্চচাপ ও নিম্নচাপ:

দিনে স্থলভাগ জলভাগ থেকে উষ্ণ থাকে। উষ্ণ স্থলভাগ তার উপরে থাকা বাতাসের উষ্ণতা বৃদ্ধি করে।

বায়ু উষ্ণ হলে তা হালকা হয়ে উপরে ওঠে। ফলে ঐ স্থানে ফাঁকা হয়ে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়।

অপরদিকে সমুদ্রের উপরের বায়ু স্থলভাগ থেকে ঠান্ডা হওয়ার কারণে তা ভারি হয়ে নিচে নেমে আসে।

এর ফলে সমুদ্রের উপর বায়ুর চাপ বেড়ে যায়। নিম্নচাপ অঞ্চলের গরম বায়ু হালকা হয়ে উপরে উঠে যায়।

এর ফলে সৃষ্ট ফাঁকা স্থান পুরণের জন্য উচ্চচাপ অঞ্চলের শীতল বায়ু নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়।

রাতে স্থলভাগ সমুদ্রের তুলনায় ঠান্ডা থাকে। তাই তখন স্থলভাগে বায়ুর উচ্চচাপ ও সমুদ্রে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়।

উচ্চচাপ ও নিম্নচাপ

তাপমাত্রার উপর বায়ুচাপ ও বায়ুপ্রবাহের নির্ভরতা :

তাপমাত্রার পরিবর্তনের ফলে বায়ুচাপের পরিবর্তন হয়।

বায়ুর তাপমাত্রা বাড়লে বায়ু প্রসারিত হয় এবং এর ঘনত্ব ও চাপ কমে যায়।

আবার বায়ুর তাপমাত্রা কমে গেলে বায়ুর ঘনত্ব ও বায়ুর চাপ বেড়ে যায়। বায়ুচাপ অবশ্য বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণের (বায়ুর আর্দ্রতার) উপরও নিভর্র করে।

বায়ুতে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে গেলে বায়ুচাপ কমে যায়।
বায়ুচাপের পার্থক্যের কারণে বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টি হয়।

আমরা যেমন দেখি পানি উচ্চতা যেখানে বেশি সেখান থেকে পানি কম উচ্চতার দিকে অর্থাৎ নিচের দিকে যায় তেমনি বায়ু উচ্চচাপের এলাকা থেকে নিম্নচাপের এলাকার দিকে প্রবাহিত হয়।

আমরা শীতকালে উত্তর দিক থেকে শীতল বায়ু আমাদের দেশে প্রবাহিত হতে দেখি কারণ আমাদের বাংলাদেশ ও এর দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরের উপরের বায়ুমন্ডল উষ্ণ থাকায় এখানে বায়ুচাপ অপেক্ষাকৃত কম থাকে।

বাংলাদেশের উত্তরে হিমালয় অঞ্চলে তাপমাত্রা কম থাকায় বায়ুচাপ অপেক্ষাকৃত বেশি।

তাই উচ্চচাপের হিমালয় এলাকা থেকে শীতল বায়ু বাংলাদেশের উপর দিয়ে বঙ্গোপসাগরের দিকে প্রবাহিত হয়।

বর্ষাকালে আমরা কোন দিক থেকে কোন দিকে বায়ু প্রবাহিত হতে দেখি? শীতকালের ঠিক উল্টো, তাই না? কেন?

আমরা দেখি বর্ষাকালে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে মৌসুমি বায়ু আমাদের দেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। গ্রীষ্মকালে, বর্ষাকালে সূর্য আমাদের দেশের উপর খাড়াভাবে কিরণ দেয়।

ফলে আমাদের দেশের তাপমাত্রা তখন অনেক বেশি থাকে এবং বায়ুচাপ কম থাকে তুলনামূলকভাবে তখন বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরের বায়ুম-লের বায়ুচাপ বেশি থাকে।

ফলে বায়ু উচ্চচাপের এলাকা ভারত মহাসাগর থেকে নিম্নচাপের এলাকা বাংলাদেশ ও ভারতের দিকে প্রবাহিত হয়।

জলীয়বাষ্প, বায়ুর আর্দ্রতা, মেঘ, শিশির ও বৃষ্টিপাত

আমরা পানি অধ্যায়ে জেনেছি যে, পানি বায়বীয় অবস্থায়ও থাকতে পারে।

সমুদ্র, নদী ও অন্যান্য জলাশয় থেকে পানি বাষ্পীভূত হয়ে বায়বীয় অবস্থায় বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করে।

বায়বীয় এ পানিকে জলীয়বাষ্প বলা হয়।

বায়ুতে জলীয়বাষ্পের পরিমাণকে বলা হয় আর্দ্রতা।

তবে আবহাওয়াবিদগণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানতে ও প্রকাশ করতে ‘আপেক্ষিক আর্দ্রতা’ ব্যবহার করেন।

আপেক্ষিক আর্দ্রতা হলো কোনো তাপমাত্রায় বায়ু যে পরিমাণ জলীয়বাষ্প ধারণ করতে পারে তার তুলনায় বায়ুতে ঐ মুহূর্তে কত শতাংশ জলীয়বাষ্প রয়েছে সেটি।

একে শতাংশ হিসাবে প্রকাশ করা হয়। যেমন ধরি ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বায়ু সর্বোচ্চ প্রতি ঘনমিটারে ৪০ গ্রাম জলীয়বাষ্প ধারণ করতে পারে।

কোনো একদিন বায়ুতে ঐ তাপমাত্রায় জলীয় বাষ্প ছিল প্রতি ঘনমিটারে ২০ গ্রাম।

তাহলে ঐ সময়ে বায়ুর আপেক্ষিক আর্দ্রতা হবে ৫০ শতাংশ।

বায়ুর আর্দ্রতা ছিল ৬০ শতাংশ- এরকম তথ্যের অর্থ কী? এর অর্থ হচ্ছে ঐ দিনে যে তাপমাত্রা ছিল সেই তাপমাত্রায় বায়ুর জলীয়বাষ্প ধারণ ক্ষমতার শতকরা ৬০ ভাগ জলীয়বাষ্প বায়ুতে ছিল।

আচ্ছা, আপনাদের মনে আছে কি, কীভাবে মেঘ ও বৃষ্টি হয়?

সমুদ্র, নদী ও অন্যান্য জলাশয় থেকে পানি জলীয়বাষ্পের আকারে বায়ুমন্ডলের উপরে উঠে যায়।

জলীয়বাষ্প বায়ুমন্ডলের উপরের দিকে উঠলে তাপমাত্রা কমতে থাকে। ফলে জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে ক্ষুদ্র পানিকণায় পরিণত হয়।

এ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অসংখ্য পানিকণা মেঘ আকারে বাতাসে ভেসে বেড়ায়।

মেঘের ক্ষুদ্র পানি কণাগুলো একত্র হয়ে বড় কণায় পরিণত হয়।

বড় পানিকণাগুলো আকাশে ভেসে থাকতে পারে না বলে বৃষ্টি আকারে ভূ-পৃষ্ঠে নেমে আসে।

উপরের প্রক্রিয়া যদি হয় মেঘ ও বৃষ্টি হওয়ার প্রক্রিয়া তাহলে কি আর্দ্রতার সাথে এ প্রক্রিয়ার কোনো সম্পর্ক আছে?

আমরা দেখি বর্ষাকালে বা ভাদ্র মাসের গরমে আমাদের বেশ ঘাম হয় কিন্তু চৈত্র মাসে তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকলেও ঘাম খুব হয় না।

এর কারণ আর্দ্রতা। আর্দ্রতা বেশি থাকলে আমাদের ঘাম হয় এবং সেই সময়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়।

আসলে ব্যাপারটি সহজেই বোঝা যায়। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি মানে বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেশি। জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেশি হলে তা থেকে মেঘ এবং মেঘ থেকে বৃষ্টি হবার সম্ভাবনাও বেশি।

আমাদের দেশে আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্র মাসে মৌসুমীবায়ু ভারত মহাসাগর থেকে প্রচুর জলীয়বাষ্প নিয়ে আসে।

এ জন্য এ সময়ে বাতাসে আর্দ্রতাও বেশি, বৃষ্টিও হয় বেশি।

 

Comments are closed.