DPED প্রশিক্ষণ ভাতা প্রাপ্তীতে বাধা কোথায়: কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা
সরকারি বিধি মোতাবেক বা চাকুরী বিধিমালা অনুযায়ী সকল শিক্ষককেই DPED (ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি ইডুকেশন) প্রশিক্ষণটি গ্রহণ করতে হয়।
বিশেষ করে চাকুরী স্থায়ীকরণের কয়েকটি শর্তের মধ্যে এটি অন্যতম।
দুই বছরের মধ্যে প্রশিক্ষণ করার কথা থাকলেও বিভিন্ন কারণে প্রশিক্ষণটিতে সময়মত অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয় না।
ইতিহাস: DPED প্রশিক্ষণ কোর্স চালু হয় ২০১২ সাল হতে তার আগে ছিল সিইনএড।
পূর্বে কোর্স করানো হতো এক বছর মেয়াদী। বর্তমানে ডিপিএড চালু হবার পর থেকে একটি আঠারো মাসের কোর্স করা হয়।
এতে ভর্তির সর্বনিম্ম যোগ্যতা থাকতে হয় উচ্চমাধ্যমিক পাশ।
কোর্সটিতে আইসিটির উপর গুরুত্ব দিলেও মূলত বই পড়ার অভ্যাস, শারীরিক চর্চা, বেসলাইন মূল্যায়ন, লিখিত পরীক্ষা ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষককে শ্রেণিতে পাঠদানে অধিকতর যোগ্যতা সম্পন্ন করে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়।
একথা অস্বীকার করার কোন উপায়ে নেই ।প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য শিক্ষকদের একাডেমিক শিক্ষা ও পেশাগত প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই।
বাংলাদেশে পঞ্চাশের দশক থেকে প্রাথমিক শিক্ষার শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআইসমূহে) পর্যায়ক্রমে প্রতিষ্ঠিত হয়।
এবং এসব স্থানগুলোতে-তে শিক্ষকদের জন্য ১ বছর মেয়াদি কোর্স চালু করা হয়।
যা সার্টিফিকেট ইন এডুকেশন বলে পরিচিত ছিল।
পরবর্তীতে এক বছর মেয়াদি সার্টিফিকেট ইন এডুকেশন (সি.ইন.এড.) কোর্সটি পরিবর্তন করে ১৮ মাস মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড)[ DPED] প্রর্বতন করা হয়েছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পেশাগত মানোন্নয়নের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে একাধিক প্রতিষ্ঠান কাজ করছে।
DPED প্রশিক্ষণ কোর্সটিতে অংশগ্রহণ করায় প্রশিক্ষণ বাবদ প্রশিক্ষণার্থীদের জন প্রতি মাস হিসেবে (৩,০০০/-) তিন হাজার টাকা করে ভাতা প্রদান করা হয়।
মূলত যে টাকা থেকে অধিকাংশ টাকা পিটিআইতে বিভিন্ন কাজে ব্যয় হয়ে যায়।
বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীর কারণে শুরু থেকে প্রশিক্ষণটি মাঝে কিছু বিরতী দিয়ে অনলাইনে কার্যক্রম চলে।
বিরতীর মাঝখানেও শিক্ষকদের DPED প্রশিক্ষণের কার্যক্রমে অংশ নিতে হয়। সুতরাং এদিক দিয়ে বলা যায় বিরতীহীনভাবে প্রশিক্ষণটি চলছে।
গত ১৭মার্চ থেকে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি পিটিআইসমূহও বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও সকল পিটিআিই এর DPED ২০১৯-২০ ও ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের প্রশিক্ষণার্থীরা নেপ এর সকল নির্দেশনা মেনে সংসদ টেলিভিশনের ক্লাস পর্যবেক্ষণ করেন।
পাশাপাশি লগ বই, রিফ্লেক্টিভ জার্নাল প্রস্তুতসহ সব কার্যক্রম সম্পন্ন করেন।
তাছাড়া প্রশিক্ষণ শেষ হবার পর, গত জুন মাসে জুম অ্যাপের মাধ্যমে তাদের মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হয়।
ভাতা পেতে সমস্যা কোথায়: সকল কার্যক্রম শেষ করার পরও রাজশাহী বিভাগের শুধুমাত্র তিনটি পিটিআইতে পেতে সমস্যা কোথায়?
সারাক্ষণ শিক্ষার্থীদের বৈষম্য বিরোধী বক্তব্য দিলেও নিজেরাই (DPED প্রশিক্ষণার্থীরা ) বৈষম্যের শিকার।
এ দুঃখ প্রকাশ করা কোনভাবেই সম্ভব হয় না। তাহলে সমাজ থেকে বৈষম্য কি কোনদিনই যাবে না?
২০১৯-২০, ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থীরা কেন তাদের প্রাপ্য পাবেন না তা আজও অজানা।
তবে বিভিন্ন পত্রিকা মারফত জানা যায়, বিভাগীয় হিসাব রক্ষণ অফিস জানায়, করোনাকালীন প্রশিক্ষণ ভাতা না দিতে তাদের প্রতি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা রয়েছে।
যদিও এ সংক্রান্ত কোন লিখিত নির্দেশনা দেখাতে পারেননি।
প্রশিক্ষনার্থীদের ক্ষোভ: প্রায় তিনটি শিক্ষাবর্ষের DPED প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষণভাতা নিয়ে মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষকদের মাঝে যে হতাশা, অনাগ্রহ বিরাজ করবে তাতে শিক্ষার উপর নিশ্চিত নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন অনেকেই।
সেই সাথে DPED প্রশিক্ষণ ভাতা তারা পাবে কি পাবে না সে বিষয়ে পরিষ্কার বক্তব্য আশা করছেন।
যদি না পায় তাহলে তার কারণও জানতে আগ্রহী তারা।
মুখে মুখে পাবে বলে শুনে আসলেও প্রশিক্ষণার্থীরা মূলত সুস্পষ্ট বক্তব্য আশা করছে।