Customize Consent Preferences

We use cookies to help you navigate efficiently and perform certain functions. You will find detailed information about all cookies under each consent category below.

The cookies that are categorized as "Necessary" are stored on your browser as they are essential for enabling the basic functionalities of the site. ... 

Always Active

Necessary cookies are required to enable the basic features of this site, such as providing secure log-in or adjusting your consent preferences. These cookies do not store any personally identifiable data.

No cookies to display.

Functional cookies help perform certain functionalities like sharing the content of the website on social media platforms, collecting feedback, and other third-party features.

No cookies to display.

Analytical cookies are used to understand how visitors interact with the website. These cookies help provide information on metrics such as the number of visitors, bounce rate, traffic source, etc.

No cookies to display.

Performance cookies are used to understand and analyze the key performance indexes of the website which helps in delivering a better user experience for the visitors.

No cookies to display.

Advertisement cookies are used to provide visitors with customized advertisements based on the pages you visited previously and to analyze the effectiveness of the ad campaigns.

No cookies to display.

Take a fresh look at your lifestyle.

শিক্ষকতা পেশার ধারণা ও এর প্রতি আবেগ অনুভূতি ও আগ্রহ সৃষ্টি

650

শিক্ষকতা পেশার ধারণা ও শিক্ষকতা পেশার প্রতি আবেগ অনুভূতি ও আগ্রহ সৃষ্টি

 

পেশার ধারণা

পেশা’ বা ‘profession’ একটি সুপরিচিত শব্দ। সাধারণভাবে জীবনধারণ বা জীবিকা নির্বাহের উপায় বা পন্থাকে পেশা হিসেবে অভিহিত করা হলেও সকল জীবিকা নির্বাহের উপায় পেশা নয়। কেননা জীবিকা নির্বাহের উপায় বা পন্থাকে বলা হয় বৃত্তি বা occupation।
কোনো বৃত্তি তখনই পেশার মর্যাদা লাভ করবে যদি তার সুশৃঙ্খল জ্ঞান ও তাত্ত্বিক ভিত্তি, বিশেষ দক্ষতা ও নৈপূণ্য, পেশাগত দায়িত্ব ও জবাবদিহিতা, পেশাগত সংগঠন ও নিয়ন্ত্রণ, পেশাগত নীতিমালা ও মূল্যবোধ, জনকল্যাণমুখীতা ও উপার্জনশীলতা, ঐতিহাসিক পটভূমি এবং সামাজিক স্বীকৃতি থাকে।
এদিক থেকে সকল পেশাকেই বৃত্তি বলা গেলেও সকল বৃত্তিকে পেশা হিসেবে অভিহিত করা যায় না। যেমনÑ রিক্সাচালক হচ্ছেন বৃত্তিজীবী এবং ডাক্তার হচ্ছেন পেশাজীবী। সকল পেশারই পেশাগত মূল্যবোধ ও নীতিমালা রয়েছে, যা তাকে স্বতন্ত্র মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করে।

বৃত্তি

বৃত্তির ইংরেজি প্রতিশব্দ ‘Occupation’। বৃত্তি বলতে জীবন ধারণের সাধারণ উপায় বা অবলম্বনকে বুঝানো
হয়। যার জন্য উচ্চতর তাত্ত্বিক জ্ঞান ও ব্যবহারিক শিক্ষা-প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয় না। যেমন- কুলি, মজুর, রিক্সাচালনা, ঘরের কাজ, গৃহপরিচারিকার কাজ ইত্যাদি হচ্ছে বৃত্তির উদাহরণ।

বৃত্তিজীবীরা ইচ্ছে করলেই তার বৃত্তি পরিবর্তন করে অন্য কোনো বৃত্তিতে সম্পৃক্ত হতে পারে। যেমন- একজন সক্ষম ভিক্ষুক ইচ্ছে করলেই ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে রিক্সা চালাতে পারে।

পেশা

বাংলা পেশা মূলত একটি ফারসি শব্দ। অন্যদিকে পেশার ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো ‘Profession’। যার অভিধানিক অর্থ জীবিকা বা জীবন ধারণের বিশেষ উপায় (Occupation)। তবে জীবিকা নির্বাহের সকল উপায় বা পন্থা পেশা নয়। যেমন- রিক্সাচালক ও ডাক্তারের কাজ উভয়ই জীবিকা নির্বাহের উপায় হলেও রিক্সচালকের কাজ বৃত্তি এবং ডাক্তারের কাজ পেশা হিসেবে বিবেচিত হবে।

কেননা মানবজ্ঞানের কোনো একটি নির্দিষ্ট শাখার উচ্চমানের তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক দক্ষতা অর্জন করে সে জ্ঞানকে অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যে তথা জীবন ধারণের উপায় হিসেবে প্রয়োগ করলে তা পেশা হিসেবে বিবেচিত হবে।

সুতরাং পেশা বলতে বিশেষ কোনো বিষয়ে নির্দিষ্ট জ্ঞান, দক্ষতা, নৈপূণ্য, মূল্যবোধ, বিশেষ নীতি ও বৈশিষ্ট্যসম্পনড়ব বৃত্তিকে বোঝায়। যা সাধারণত জনকল্যাণমূখী এবং পেশাগত সংগঠনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়ে থাকে। যে কোনো পেশাকে পরিপূর্ণ পেশার মর্যাদা অর্জন করতে হলে সমাজ ও রাষ্ট্রের স্বীকৃতি অর্জন করতে হয়।

 

 

পেশা ও বৃত্তির পার্থক্য

পেশা (profession) বলতে কোনো বিশেষ ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য, দক্ষতা, নৈপূণ্য ও সুশৃঙ্খল জ্ঞান সম্পন্ন বৃত্তিকে বোঝানো হয়। প্রতিটি পেশার পেশাগত নৈতিক মানদন্ড ও মূল্যবোধ থাকে যেগুলো এক পেশাকে অন্য পেশা হতে স্বতন্ত্র পরিচয়ে পরিচিত করে।

অন্যদিকে, বৃত্তি (occupation) বলতে জীবন নির্বাহের সাধারণ উপায়কে নির্দেশ করে যার জন্য তাত্ত্বিক জ্ঞানের আবশ্যকতা নেই। সুতরাং পেশা ও বৃত্তির মধ্যে সম্পর্ক থাকলেও এদের মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে। পেশার জন্য নিজস্ব সুসংগঠিত ও প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান একান্ত প্রয়োজন। পেশার সামাজিক উনড়বয়ন ও স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য প্রত্যেক পেশারই পেশাগত সংগঠন রয়েছে।

অন্যদিকে বৃত্তির ক্ষেত্রে বিশেষ জ্ঞানার্জনের বাধ্যবাধকতা নেই। বৃত্তির জন্য পেশাগত সংগঠনের আবশ্যকতা নেই। পেশাগত নীতিমালা ও মূল্যবোধ দ্বারা প্রতিটি পেশা পরিচালিত হয়। এসব নীতিমালা ও মূল্যবোধ পেশাদার ব্যক্তিকে তার পেশাগত দায়িত্ব পালনে দায়িত্বশীল ও দায়বদ্ধ করে তোলে।

কিন্তু বৃত্তির ক্ষেত্রে নৈতিক মানদন্ড বা মূল্যবোধর উপস্থিতি পরিলক্ষিত হলেও তা পরিবর্তনশীল এবং ব্যক্তির ইচ্ছা অনিচ্ছার উপর নির্ভরশীল। পেশার ক্ষেত্রে জনকল্যাণমুখীতা ও জবাবদিহিতা আবশ্যক। তবে বৃত্তির ক্ষেত্রে জনকল্যাণ ও জবাবদিহিতা অনুপস্থিত থাকতে পারে। কেননা তা ব্যক্তি নির্ভর হয়ে থাকে।

পেশার অন্যতম বৈশিষ্ট্য সামাজিক স্বীকৃতি; সামাজিক স্বীকৃতি ব্যতীত কল্যাণকামী হওয়া সত্ত্বেও কোনো কোনো বৃত্তি পেশার মর্যাদা নাও পেতে পারে। কোনো পেশাদার ব্যক্তি ইচ্ছা করলেই পেশা পরিবর্তন করতে পারে না। অন্যদিকে, বৃত্তি সহজে পরিবর্তন করা যায়। যেমনÑ একজন প্রকৌশলী ইচ্ছা করলেই চিকিৎসক হতে পারবেন না।

কিন্তু একজন দিনমজুর ইচ্ছা করলে রিক্সচালক হতে পারবেন। পেশার সঙ্গে দক্ষতা ও যোগ্যতার বিষয়টি জড়িত হলেও বৃত্তির ক্ষেত্রে দক্ষতা ও যোগ্যতায় বিষয়টি ততটা মুখ্য বিষয় নয়। সুতরাং এটা প্রতীয়মান হয় যে, পেশা ও বৃত্তির মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান। এ প্রসঙ্গে সংক্ষেপে বলা যায় যে, “প্রত্যেক পেশাই বৃত্তি, কিন্তু প্রত্যেক বৃত্তিই পেশা নয়।”

 

পেশার বৈশিষ্ট্য / মানদন্ডসমূহ

কোনো বৃত্তি বা জীবিকা নির্বাহের উপায়কে পেশার মর্যাদা অর্জন করতে হলে তার মধ্যে কতগুলো সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য থাকা অপরিহার্য। কোনো বৃত্তি (occupation) পেশার (profession) মর্যাদা অর্জন করেছে কি না তা যেসব বৈশিষ্ট্যেও আলোকে মূল্যায়ন করা হয় সেগুলোকে পেশার মানদন্ড বলা হয়।

১. সুশৃঙ্খল জ্ঞান ও তাত্ত্বিক ভিত্তি : প্রত্যেকটি পেশারই সুশৃঙ্খল জ্ঞান ও তাত্ত্বিক ভিত্তি থাকতে হয়। সে জ্ঞান হবে
প্রচারযোগ্য ও প্রয়োগযোগ্য এবং যা অর্জিত, গঠিত ও বিকশিত হয়। পেশাগত সুশৃঙ্খল জ্ঞান ও তাত্ত্বিক ভিত্তি পেশাদার ব্যক্তিকে তার দায়িত্ব সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পালনে সক্ষম করে তোলে।

২. বিশেষ দক্ষতা ও নৈপূণ্য : পেশাদার ব্যক্তির জ্ঞান ও যোগ্যতাকে বাস্তবে প্রয়োগের জন্য বিশেষ দক্ষতা ও নৈপূণ্য অর্জন আবশ্যক। পেশাদার ব্যক্তির শুধু জ্ঞান থাকলেই হবে না, জ্ঞানকে বাস্তবে প্রয়োগ করার দক্ষতা ও নৈপূণ্যতা অর্জন করতে হবে। পেশাদার ব্যক্তির এরূপ দক্ষতা অর্জন ও অর্জিত জ্ঞানকে প্রয়োগ করার নৈপূণ্য একটি মানসম্মত শিক্ষা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আসে।

৩. পেশাগত দায়িত্ব ও জবাবদিহিতা : পেশাগত জ্ঞানকে পেশার উনড়বয়ন ও সামাজিক কল্যাণের জন্য প্রয়োগ করা প্রত্যেক পেশাদার ব্যক্তির পেশাগত দায়িত্ব। পেশাগত দায়িত্বের সাথে পেশাগত জবাবদিহিতা বিষয়টিও ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। যে কোনো পেশার উনড়বয়ন ও বিকাশ যথাযথ পেশাগত দায়িত্ব পালন ও জবাবদিহিতার সাথে সম্পৃক্ত।

৪. পেশাগত নীতিমালা ও মূল্যবোধ : পেশা নিজস্ব মূল্যবোধ ও নীতিমালা নির্ভর হয়ে থাকে। পেশাগত মূল্যবোধ ও নীতিমালা একটি পেশাকে অপর পেশা থেকে আলাদা ও স্বতন্ত্র সত্ত্বা প্রদান করে। এছাড়া পেশাদার ব্যক্তির পেশাগত আচরণ নিয়ন্ত্রণে এই বৈশিষ্ট্য একান্ত আবশ্যক।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, একজন চিকিৎসক ব্যক্তিগত সুবিধা লাভের আশায় রোগীকে অপ্রয়োজনীয় প্যাথলোজিক্যাল পরীক্ষা করার পরামর্শ দিতে পারেন না। অনুরূপভাবে একজন আইনজীবী বাদী-বিবাদী উভয়পক্ষ থেকে আর্থিক সুবিধা আদায়ের বিনিময়ে একই সঙ্গে উভয়পক্ষকে আইনী সহায়তা দিতে পারেন না।

৫. পেশাগত নিয়ন্ত্রণ ও পেশাগত সংগঠন : পেশাগত নিয়ন্ত্রণ যে কোনো পেশার পেশাগত মর্যাদা লাভের গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। এক্ষেত্রে বিধি-বিধান ও আইনের মাধ্যমে পেশার অন্তর্ভুক্তি, পেশাগত পরিচিতি, অনুশীলন, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ইত্যাদি সংরক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করা উল্লেখযোগ্য।

পেশাগত নিয়ন্ত্রণের উদাহরণ হচ্ছে সার্টিফিকেট, লাইসেন্স এবং রেজিস্ট্রেশন। পেশাগত সংগঠনের মাধ্যমে পেশার সামাজিক উন্নয়ন, স্বার্থ সংরক্ষণ তথা সার্বিক বিকাশ ও নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। পেশাগত সংগঠন পেশার গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ও মানদন্ড হিসেবে বিবেচিত।

৬. সামাজিক স্বীকৃতি : রাষ্ট্র বা সমাজকর্তৃক আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি ব্যতীত কোনো বৃত্তি পেশার মর্যাদা লাভ করতে পারে না। এই স্বীকৃতি সাধারণত সার্টিফিকেট, লাইসেন্স অথবা রেজিস্ট্রেশন সিস্টেমের মাধ্যমে প্রদান করা হয়।

৭. জনকল্যাণমুখীতা ও উপার্জনশীলতা : জনকল্যাণকে উদ্দেশ্য করে প্রত্যেক পেশাদার ব্যক্তি আয়ের উৎস হিসেবে তার অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতা বাস্তবে প্রয়োগ করে থাকে। তাই জনকল্যাণমুখীতা ও উপার্জনশীলতা পেশার গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। যেমন- চিকিৎসা, আইন, শিক্ষকতা ইত্যাদি ক্ষেত্রে উভয় জনকল্যাণমুখীতা ও উপাজনশীলতার দিকটি লক্ষণীয়।

৮. ঐতিহাসিক পটভূমি ও বাস্তবমুখী জ্ঞান : পেশাদার ব্যক্তির জ্ঞান অবশ্যই বাস্তবমুখী ও প্রয়োগ উপযোগী। এছাড়া প্রত্যেক পেশার পেশা হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হওয়ার পেছনে পর্যায়ক্রমিক ও ধারাবাহিক পটভূমি বিদ্যমান। যার ফলে প্রতিটি পেশার নিজস্ব ঐতিহাসিক বিবর্তনের ইতিহাস গড়ে ওঠে।

উপরোক্ত বৈশিষ্ট্য বা মানদন্ডের আলোকে কোনো বৃত্তি বা জীবিকা পেশা কি না তা নির্ধারণ করা হয়। সেজন্য এগুলোকে পেশার মানদন্ড হিসেবে অভিহিত করা হয়।

শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশ বা শিশুবর্ধন :

Comments are closed.