Take a fresh look at your lifestyle.

সুপারফুড কাঁচা পেঁপে : মহৌষধী, যাদুকরী উপকারিতা, রয়েছে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও

0 39

পেঁপে একটি পুষ্টিকর ফল। কাঁচা পেঁপে পাকা পেঁপের চেয়ে বেশি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। তবে এটা ভাবার সুযোগ নেই যে, পাকা পেঁপের কোনও স্বাস্থ্যগুণ নেই। তবে কাঁচা পেঁপে খেলে বাড়তি কিছু উপকার পাওয়া যায়। যদিও বেশিরভাগ মানুষের ধারণা পাকা পেঁপেতে বেশি স্বাস্থ্যগুণ রয়েছে। পেঁপে কাঁচা-পাকা দুই ভাবেই খাওয়া যায়। এটা বারোমাসি ফল। বছরের প্রায় সব সময়ই কম বেশি পাওয়া যায় ফলটি। পাখি পাকা পেঁপে খেতে ভালবাসে।

ভিটামিন, শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট, আঁশ, ভিটামিন এ,বি,সি,ডি, প্রোটিন, ফাইটো-নিউট্রিয়েন্টস এবং প্যাপেইন ও কাইমোপাপেইনের মতো এনজাইমের প্রয়োজনীয় পুষ্টিতে সমৃদ্ধ। এছাড়া পটাশিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম ও অ্যালবুমিন এনজাইম থাকে পেঁপেতে। বিশেষজ্ঞরা একে ‘সুপারফুড’ হিসেবেও আখ্যায়িত করে থাকেন।

শরীর সুস্থ রাখতে ও শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে কাঁচা পেঁপে দারুণ কার্যকর। বিশেষজ্ঞরা বলেন, মানুষের ভেতরের সৌন্দর্যের যত্ন নিলে তা আপনা-আপনি বাইরের সৌন্দর্য হিসেবে ফুটে ওঠে। মানুষের শরীরের ভেতর থেকে পরিষ্কার করতে সক্ষম এই কাঁচা পেঁপে। কাঁচা পেঁপে বহু রোগের মহৌষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে প্রাচীনকাল থেকেই। স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় পেঁপের অবস্থান অন্যতম। কাঁচা অবস্থায় সবজি ও পাকা অবস্থায় ফল হিসেবে খাওয়া হয় পেঁপে।

কাঁচা পেঁপে ভাজি ও ডাল দিয়ে নানারকম তরকারি খাওয়া হয়ে থাকে। শুধু তাই নয়, এটি বিভিন্ন মাংসেও দিয়ে রান্না করা হয়। এ ছাড়া কাঁচা পেঁপের হালুয়া আমাদের দেশে অনেক অনেক জনপ্রিয়। পেঁপে অনেক রোগ সারাতে কার্যকর, এটা শত শত বছর ধরেই স্বীকৃত। হজমের জন্য এই ফল খুবই উপকারি। কিছু ক্ষেত্রে পোকা মাকড়ের কামড়, অল্প পুড়ে গেলে তা থেকে পরিত্রাণ পেতে পেঁপের জুস লাগালে উপকার পাওয়া যায়। অধুনা বিশ্বে কসমেটিকস তৈরিতেও পেঁপে ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হচ্ছে। বাড়ন্ত শিশুর জন্য পেঁপে একটি আদর্শ খাবার।

পুষ্টি উপাদান:

১০০ গ্রাম কাঁচা পেঁপেতে রয়েছে ৭.২ গ্রাম শর্করা, ক্যালোরি থাকে ৩২ কিলোগ্রাম মতান্তরে ৩৯ কিলোগ্রাম, ভিটামিন সি ৫৭ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ৬.০ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৬৯ মিলিগ্রাম, খনিজ ০.৫ মিলিগ্রাম এবং ফ্যাট বা চর্বি থাকে ০.১ মিলিগ্রাম।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, কাঁচা পেঁপের মধ্যে এমন কিছু প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা সারিয়ে তুলতে পারে বহু জটিল রোগ।

 

কাঁচা পেঁপে এর উপকারিতা :

 

১। ওজন কমাতে বা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়ক

ছিপছিপে থাকতে ও মানব দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে কাঁচা পেঁপে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পেঁপেতে পাপাইন নামক যে উৎসেচক থাকে তা ওজন কমাতে বড় ভূমিকা নেয়। এতে অনেক আঁশ বা ফাইবার রয়েছে। পেঁপেতে কম ক্যালোরি আছে এবং মেদ কমানোর জন্য বিশেষ কিছু উপাদান রয়েছে। পেঁপেতে থাকা ফাইবার দীর্ঘ ক্ষণ পেট ভর্তি রাখতে সাহায্য করে। ফলে ঘন ঘন খাবার খাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয় না। ওজন বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকিও কমে। ওজন কমাতে প্রতিদিন খাবারের সঙ্গে কাঁচা পেঁপে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এতে শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বি দূর হয়।

যেভাবে খাবেন-
১. শরীর ঠিক রাখতে নিয়মিত কাঁচা পেঁপের জুস খেতে পারেন। কাঁচা পেঁপের সঙ্গে শসা মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। এতে একটু লেবু চিপে দিয়ে খেতে পারেন।
২. সালাদ খেতে পারেন।
৩. তরকারি হিসেবেও কাঁচা পেঁপে খেতে পারেন।
৪. দইয়ের সঙ্গে গ্রেট করে কাঁচা পেঁপে খাওয়া যায়।

 

২। অ্যাসিডিটি দূর, হজমে সাহায্য ও কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি

কাঁচা পেঁপে ডায়েটারি ফাইবারে সমৃদ্ধ। যা গাঁজানো স্টার্চ তৈরি করতে সাহায্য করে যা শেষ পর্যন্ত অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়ার জন্য খাদ্য (প্রিবায়োটিক) হয়ে ওঠে। ফলে অন্ত্র থাকে সুস্থ সবল। পেঁপেতে থাকা আঁশ বা ফাইবার জটিল পেটের হজমের গোলমাল, কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যাসিডিটি বা গ্যাসের সমস্যা, ডায়রিয়া এমনকি পাইলসের সমস্যাও দূর করতে পারে। এটি পেটের জন্য অনেকটা ওষুধের মতো কাজ করে থাকে।

কাঁচা পেঁপে কোলন বা মলাশয় ও পরিপাকনালির জন্য এবং পেটের পচন প্রক্রিয়ার জন্য অনেক ভালো। এটি পেটে গিয়ে অনেকটা ঝাড়ুর মতো করে পেটকে পরিষ্কার করে ফেলে। পেঁপেতে থাকা প্যাপেইন বিপাকহার বাড়িয়ে তোলে। এতে বেশ কিছু স্বাস্থ্যকর এনজাইম থাকে। পেঁপে প্রকৃতিতে অ্যান্টি-পরজীবী এবং অ্যামিবিক বিরোধী। ফলে পেট ঠান্ডা থাকে। গ্যাস্ট্রিক সিস্টেমকে অস্বাস্থ্যকর গ্যাস সংগ্রহ করতে বাধা দেয়।

কিভাবে খাবেন-
প্রতিদিন দুপুর ও রাতে খাবারের পর এক টুকরো কাঁচা পেঁপে ভালো করে চিবিয়ে খান। তারপর এক গ্লাস পানি খাবেন এতে পেট পরিষ্কার হয় এবং গ্যাস্ট্রিক ও বদহজমের সমস্যা দ্রুত দূর হয়।

 

৩। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে কাঁচা পেঁপে

কাঁচা পেঁপে বা এর জুস

কাঁচাপেঁপেতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ খনিজ রয়েছে। এগুলো শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এই খনিজগুলি ইনসুলিন নিঃসরণ বাড়াতেও সহায়ক।

এটি মূল এনজাইমের বিরুদ্ধেও কাজ করতে পারে, যা টাইপ ২ ডায়াবেটিসের জন্য দায়ী। যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন তারা খাওয়ার অভ্যাস শুরু করুন। কাঁচা পেঁপের জুসও খেতে পারেন। কাঁচা পেঁপে বা এর জুস রক্তে চিনির পরিমাণ কমায়। আর এটি শরীরে ইনসুলিনের পরিমাণ বাড়ায়।

 

৪। উচ্চ রক্তচাপ থেকে মুক্তি দেয়

এটি দেহের সঠিক রক্ত সরবরাহে কাজ করে। আমাদের দেহে যে সোডিয়াম জমে থাকে তা দূর করতে সহায়তা করে যা হৃৎপিণ্ডের রোগের জন্য দায়ী। নিয়মিত ও পরিমিত পেঁপে খেলে উচ্চ রক্ত চাপের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

 

৫। এনজাইমের উৎস ও স্তন্যদানকারী মহিলা

কাঁচা পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক এনজাইম থাকে। এতে কেমোপেইন, প্যাপিন, পাইপাইন ও সাইমোপ্যাপিনের মতো উপাদান থাকে। এগুলো কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিন চর্বি দূর করতে বা ভাঙতে সাহায্য করে। যে মহিলারা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান তাঁদের পুষ্টির প্রয়োজন বেশি। তাই তাঁদের কাঁচা পেঁপে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কারণ এটা শরীরের সমস্ত এনজাইমের ঘাটতি পূরণ করে।

 

৬। বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশনে উপকারী

কাঁচা পেঁপে এবং এর বীজে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এ, সি এবং ই। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে। এটি সর্দি-কাশি সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করে। এটি প্রস্রাবের সমস্যায়ও উপকারী হতে পারে। কাঁচা পেঁপে শরীরে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি বন্ধ করে।

 

৭। জয়েন্টের সমস্যা দূর করে

কাঁচা পেঁপে বাত ও জয়েন্টের জন্য উপকারী। বাতের সমস্যায় আরাম পাওয়ার জন্য গ্রিন টি-র সঙ্গে ফুটিয়ে চা তৈরি করে খাওয়া যেতে পারে। কাঁচা পেঁপেতে ফ্ল্যাভোনয়েড এবং বিটা-ক্যারোটিনের মতো প্রদাহবিরোধী যৌগ রয়েছে। নিয়মিত খাদ্যতালিকায় কাঁচা পেঁপে অন্তর্ভুক্ত করলে শরীরের যেমন বাত বা জয়েন্টে ব্যথা কমবে।

 

৮। অবাঞ্ছিত লোম থেকে পরিত্রাণ পেতে

শরীরের অবাঞ্ছিত লোমগুলি খুব কুৎসিত দেখায় এবং তা থেকে মুক্তি পাওয়াও কঠিন। কাঁচা পেঁপে দিয়েও অবাঞ্ছিত লোমের পুনঃবৃদ্ধি রোধ করা যায়। এতে প্যাপেইন নামে একটি শক্তিশালী এনজাইম রয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ফার্মাসিউটিক্যালস-এ প্রকাশিত সমীক্ষায় বলা হয়- প্যাপেইন অবাঞ্ছিত লোমের পুনঃবৃদ্ধি রোধ করে।

৯। পুষ্টির পাওয়ার হাউস কাঁচা পেঁপে

ব্রিটিশ জার্নাল বা সাময়িকী নিউট্রিশন এ প্রকাশিত গবেষণায় জানানো হয়েছে যে, কাঁচা পেঁপেতে গাজর ও টমেটোর চেয়েও অনেক বেশি ক্যারটিনয়েডস পাওয়া যায়। তাই এটি আমাদের শরীরের ক্যারটিনয়েড ও ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে পুষ্টির উৎস হিসেবে কাজ করে।

 

১০। ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায় কাঁচা পেঁপে

পেঁপেতে রয়েছে ভিটামিন এ, সি এবং ই। এ ছাড়াও এতে আছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট-এর মতো উপাদান। ভিটামিন, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ত্বককে ভিতর থেকে সতেজ এবং সজীব রাখে। এগুলোর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা ত্বককে ফ্রি র‍্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে । ত্বকের পুষ্টিদায়ক উপাদান কোলাজেন বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে পেঁপে। নিয়ম করে পেঁপে খেলে ত্বক ঝলমলে হবে।

ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে কাঁচা পেঁপে
ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে কাঁচা পেঁপে

সবুজ পেঁপেতে রয়েছে ফাইবার, যা ত্বক থেকে টক্সিন শোষণ করে। এর সাহায্যে আপনি ব্রণ, ফ্রেকলস এবং পিগমেন্টেশনের সমস্যা এড়াতে পারেন। এতে উপস্থিত ভিটামিন এবং অন্যান্য পুষ্টি আপনার ত্বককে সুস্থ রাখে। কাঁচা পেঁপে খাবারের ফলে শরীরের যেকোনো ক্ষত বা ক্ষত সারানোর সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে ব্রণ এবং ত্বকের ওপর নানা দাগ দূর করতে পারে কাঁচা পেঁপে।

কোষ মরে যায় এ সমস্যা দূর করতে পারে পেঁপে।
বিশেষত বয়োঃসন্ধিকালে বা মুখমণ্ডলে ময়লা জমার কারণে যে ব্রণ সৃষ্টি হয়, তা দূর করতে নিয়মিত পেঁপে খেতে হয়। এতে আপনার ত্বক পরিষ্কার হবে। এছাড়া পেঁপের ভেতরের অংশসহ মাস্ক এর মতো ব্যবহার করলে ব্রণ দূর হয়। তবে চোখ থেকে সাবধান থাকতে হবে।

১১। ডেঙ্গু রোগ নিরাময় কার্যকর

ডেঙ্গু রোগ হলে প্রচণ্ড জ্বর হয়। এতে প্লাটিলেট কমে যায় দ্রুততার সাথে। কাঁচা পেঁপে শ্বেত রক্তকণিকার প্লাটিলেট সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে এ পরিস্থিতিতে একটা বড় হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে কাঁচা পেঁপে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে পেঁপে পাতার রস খেতে পরামর্শ দেন অনেকেই।

 

১২. হৃদপিন্ড

কাঁচা পেঁপে দেহে সঠিকভাবে রক্ত সরবরাহের কাজ করে। আমরা জানি হৃৎপিণ্ডের রোগের জন্য দায়ী সোডিয়াম। দেহে জমা থাকা এসব সোডিয়াম দূর করতে ভীষণ কার্যকর পেঁপে। নিয়মিত পেঁপে খেলে হৃদপিন্ডের রোগ থেকে মুক্তি মিলে। এছাড়াও মুক্তি মিলে উচ্চ রক্ত চাপ থেকেও।

 

১৩। আথ্রাইটিস সমস্যায়  কাঁচা পেঁপে

অনেকগুলো গবেষণায় পাওয়া গেছে, কাইমোপ্যাপিন নামের এনজাইম থাকায় পেঁপে ওসটিওআথ্রাইটিস ও রিউমেটয়েড রোগ সারায়।

 

১৪। নারীদের রজঃস্রাব সমস্যায় পেঁপে

অনেক সময়ই নারীদের অনিয়মিত রজঃস্রাব হয়। সেসকল নারীদের জন্য পেঁপের জুস উপকারী। এ সমস্যায় কাঁচা বা পাকা পেঁপে খেলে উপকার পাওয়া যায়। যেহেতু এই ফল শরীর উত্তপ্ত করে, তাই এটি ‘হট ফুড’ হিসেবেও স্বীকৃত।

 

১৫। বার্ধক্যে দৃষ্টিশক্তিহীনতা দূর করে

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার একটা আশংকা থাকেই। এটি দূর করতে নিয়মিত পেঁপে খাওয়া খুব জরুরি। এই ফল বা সবজিতে থাকা বিটা ক্যারোটিন নামের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে।

 

১৬। শরীরের যন্ত্রণা সারায় 

পেঁপেতে থাকা কাইমোপ্যাপিন ও প্যাপিন এনজাইম শরীরের যন্ত্রণা লাঘব করতে সাহায্য করে। শরীরের কোথাও পুড়ে গেলে পেঁপের নির্যাস ব্যবহার কররে স্বস্থি পাওয়া যায়।

 

১৭. নারীদের জন্য

পেঁপের পুষ্টিগুণ মেয়েদের জন্য অনেক বেশি দরকারি। কেনা এটি নারীদের যে কোনো ধরনের ব্যথা কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। পেঁপের পাতা, তেঁতুল ও লবণ একসঙ্গে মিশিয়ে পানি দিয়ে খেলে ব্যথা একেবারে ভালো হয়ে যায়। এটি প্রচলিত রয়েছে বহুকাল হতে।

পেঁপের পুষ্টিগুণ মেয়েদের জন্য অনেক বেশি দরকারি।

১৮। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পেঁপে 

জাপানে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁপেতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটা প্রমাণিত যে, পেঁপে গাছের মূল ও ফুল কিডনি রোগ, ব্রংকাইটিস ও জন্ডিস সারায়।

 

১৯। বিবিধ

এ ছাড়া কাঁচা পেঁপে হাঁপানি, অস্টিও আর্থারাইটিস, গাউট, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের রোগের উপকারে এবং হার্টকে ভালো রাখতে অনেক কার্যকরী।

 

পেঁপের অপকারিতা বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

এই ফলের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলি সেভাবে প্রমাণিত হয়নি এখনও । তারপরেও পেঁপের ৬টি পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া বা অপকারিতা সম্পর্কে এখানে আলোচনা করা হলো।

 

বাচ্চাদের জন্য নিরাপদ নয়

চিকিৎসকরা প্রায়েই জানান যে, এক বছরের কম বয়সের শিশুদের পেঁপে দেওয়া উচিত নয়। আসলে, ছোট বাচ্চারা খুব কম জল পান করে। পর্যাপ্ত পরিমাণ জল খাওয়া ছাড়াই উচ্চ ফাইবারযুক্ত এই ফলটি খেলে মল শক্ত করে তোলে। এর ফলে শিশুরা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগতে পারে। এজন্য, কাঁচা বা রান্না করা কোনও অবস্থাতেই বাচ্চাদের এই ফলটি দেবেন না।

 

গর্ভবতী মহিলার পক্ষে ক্ষতিকারক

পেঁপে খুব পুষ্টিকর ফল তবে এটি গর্ভবতী মহিলাদের পক্ষে খুব ক্ষতিকর। চিকিৎসকগণ গর্ভাবস্থায় মহিলাদের পেঁপে খাওয়া যতটা সম্ভব এড়াতে পরামর্শ দেন। প্রকৃত পক্ষে পেঁপের বীজ, শিকড় এবং পাতা ভ্রূণের ক্ষতি করে। কাঁচা পেঁপেতে ক্ষীরের ভারী উপস্থিতির কোরণে জরায়ুর সংকোচনের কারণ হতে পারে। অন্যদিকে পেঁপেতে উপস্থিত পেপাইন দেহের ঝিল্লি ক্ষতিগ্রস্থ করে, যা ভ্রূণের বিকাশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।

পেঁপে আপনার দেহের তাপমাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে, আপনি যখন গর্ভবতী হন তখন তা ভালো না। এগুলি ছাড়াও ফলটি ল্যাটেক্স সমৃদ্ধ যা জরায়ুর সংকোচন, রক্তপাত এবং এমনকি গর্ভপাত ঘটাতে পারে। অর্থাৎ পেঁপে গর্ভবতী নারীদের জন্য ক্ষতিকর। পেঁপে খেলে গর্ভপাতের আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। এটি ভ্রূণের বিকাশকেও বাধাগ্রস্ত করতে পারে সুতরাং গর্ভাবস্থায় পাকা ছাড়াও কাঁচা পেঁপে খাওয়া এড়ান।

 

শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা সৃষ্টি করে

পেঁপেতে উপস্থিত একটি এনজাইমকে অ্যালার্জেন বলা হয়। এটি অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতা যেমন হাঁপানির মতো সমস্যা হতে পারে। যাদের এ জাতীয় সমস্যা রয়েছে তাঁদের অতিরিক্ত পরিমাণে পেঁপে খাওয়া এড়ানো উচিত। যদি কোন সমস্যা হয়েই যায় তবে চিকিৎসকের পরামর্শের পরে এই ফলটি খান। কী পরিমাণ ফল আপনার জন্য ভালো তা চিকিৎসক আপনাকে জানাতে পারবে।

 

হজমের সমস্যা বৃদ্ধি করে

কোষ্ঠকাঠিন্যে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাধারণত পেঁপে খেতে বলা হয়ে থাকে। অন্য দিকে এতে উপস্থিত অতিরিক্ত ফাইবার সেবন করলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হতে পারে। এতে উপস্থিত প্রচুর পরিমাণে ফাইবার হজম সিস্টেমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। গবেষণায় তথ্য পাওয়া যায়, পেঁপের অত্যধিক গ্রহণের ফলে পেটের পেট, ফোলাভাব, পেট ফাঁপা এবং বমিভাব হতে পারে। পেঁপের কালো বীজগুলি শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এগুলোতে টক্সিক এনজাইম কারপাইন থাকে, যা মস্তিষ্কে অসাড়তা তৈরি করে কার্ডিয়াক ডিপ্রেশন বা প্যারালাইসিস তৈরি করতে পারে।

 

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিপজ্জনক

যদিও ডায়াবেটিস রুগির জন্য উপকার। পেঁপেতে থাকা নানা পুষ্টি উপাদান টাইপ ওয়ান এবং টাইপ টু ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে। তবে, অতিরিক্ত পরিমাণে পেঁপে খাওয়া রক্তে শর্করার পরিমাণও হ্রাস করতে পারে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের পেঁপে খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

 

পেঁপের কালো বিচি:

পেঁপের কালো বিচিগুলোও শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে যা আগেও বলা হয়েছে। এগুলোতে টক্সিক এনজাইম কারপাইন থাকে । এ উপাদান মস্তিষ্কে অসাড়তা তৈরি করে কার্ডিয়াক ডিপ্রেশন বা প্যারালাইসিস তৈরি করতে পারে।

 

কাঁচা পেঁপের রস

কাঁচা পেঁপের রস বিষাক্ত ও ক্ষতিকর। কাঁচা পেঁপের নির্যাস শরীরে চুলকানি সৃষ্টি করতে পারে। এটি পান করলে বদহজম, বিষক্রিয়া ও অ্যাবডোমিনালে ব্যথা হতে পারে।

শিখনের ক্ষেত্র: বুদ্ধিবৃত্তিক বা জ্ঞানীয়, আবেগীয় ও মনোপেশীজ- ব্লুম তত্ত্ব

Leave A Reply