শিশু রিমি (৫) বুধবার বেলা ১১টা, কুমিল্লার বুড়িচং হালগাঁও গ্রামে লোকমান হোসেনের বাড়িতে কান্নাকাটি করছে। পাশে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে তিন মাসের শিশু আরাফাত। এই অবুঝ দুই সন্তানকে কেউ সান্ত্বনা দিতে পারছেন না।
কান্নারত কণ্ঠে শিশু রিমি বলে- বাবাকে পুলিশে নিয়ে গেছে, মাকে কবর দেওয়া হয়েছে। সে বারবার বলছে- আমাকে মা-বাবার কাছে নিয়ে যাও। দুই দিন আগেও রিমির বাবা-মা দুইজনই ছিলেন।
দুর্ভাগ্য রিমির মা বাবার হাতে খুন হয়েছেন। পরে তার বাবাকে ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ। এখন এই দুই শিশুকে পৃথিবীতে দেখার মতো আপন কেউ নেই।
জানা গেছে, বুড়িচংয়ের মোকাম ইউনিয়ন হালগাঁও গ্রামে স্ত্রী ও শাশুড়িকে ছুরিকাঘাত করে মাদকাসক্ত লোকমান হোসেন।
এতে ঘটনাস্থলেই মা-মেয়ে মারা যায়। এ ঘটনায় বুড়িচং থানায় বুধবার মামলা দায়ের করা হয়েছে। লোকমানকে পুলিশ গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।
নিহতরা হলেন- কুমিল্লা সদর উপজেলার কালিরবাজার ইউনিয়নের বল্লভপুর গ্রামের শাহালম মিয়ার স্ত্রী জানু বিবি (৫৫) ও তার মেয়ে ফারজানা বেগম (২৫) ।ঘাতক লোকমান হোসেন উপজেলার ৭নং মোকাম ইউনিয়নের নিমসারের হালগাঁও গ্রামের মৃত আলম মিয়ার ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, শাশুড়ি জামাতার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। বিকালে শাশুড়ি ও স্ত্রীকে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে লোকমান হোসেন। পরে তাকে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। লোকমান মাদকাসক্ত ছিল বলে স্থানীয়রা জানায়। এদিকে আরাফাত ও রিমির আশ্রয় মিলেছে মোকাম ইউনিয়নের হালগাঁও গ্রামের পাশের বাড়ির মানবিক নারী রোকেয়া বেগমের বাড়িতে। রোকেয়া বেগমের স্বামী মারা গেছেন অনেক আগে।
রোকেয়া বেগম বলেন, পৃথিবীতে তো তাদের কেউ নেই; তাই আমি তাদের আশ্রয় দিয়েছি। হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বুড়িচং থানার ওসি মোজাম্মেল হক বলেন, বুড়িচংয়ের মোকাম ইউনিয়ন হালগাঁও গ্রামে মাদকাসক্ত হয়ে লোকমান হোসেন তার স্ত্রী ও শাশুড়িকে ছুরিকাঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই মা-মেয়ে মারা যান।
সূত্রঃ মুক্তপ্রভাত
Comments are closed.