প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষকদের বিভাগীয় প্রার্থিতা ছাড়াই নিয়োগ বিধি সচিব কমিটিতে পাস হয়েছে। এর ফলে সারাদেশের সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে হতাশা এবং ক্ষোভ। তাদের ন্যায্য দাবী বিভাগীয় প্রার্থিতা বহালের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১৮ই জুলাই ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটে বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক পরিষদের উদ্যোগে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ সহকারী শিক্ষক পরিষদের সভাপতি শেখ মুজাম্মেল হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, পূর্বের মতো আমাদের বিভাগীয় প্রার্থিতা বহাল রাখতে হবে। একজন মানুষের শিক্ষার মুল ভিত তৈরি করেন শিক্ষক। শিশুকে লালনপালন করে বড় করে তুলেন নিজ মহিমায়। অথচ শিক্ষার এই কারিগর যারা নতুন বাংলাদেশের ভীত রচনা করছেন তাদের ছাড়াই নিয়োগ বিধি পাস করার চক্রান্ত চলছে। আমরা এই চক্রান্ত মেনে নিতে পারি না। আমরা আমাদের প্রাপ্য অধিকার ফিরে না পেলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো। মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ও সচিব মহোদয়ের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি অবিলম্বে আমাদের দাবীর বিষয়ে সমাধান করুন তা না হলে এই শিক্ষকেরা মাঠে নামতেও প্রস্তুত আছেন।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রবিউল আওয়াল বলেন, শিক্ষক একটা জাতির মেরুদণ্ড অথচ শিক্ষকদের একের পর এক সমস্যা তৈরি করে শিক্ষকদের দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা শিক্ষক, আমাদের ন্যায্য অধিকার আছে। আমরাও স্বপ্ন দেখি। তাই অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রাখা যাবে না।
ডিপিএড প্রশিক্ষণ ভাতার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা ১৮ মাস ডিপিএড প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছি। ডাটা কিনে ক্লাস করেছি। অনেকের এনড্রয়েড মোবাইল না থাকায় মোবাইল কিনতে হয়েছে। এ্যাসাইনমেন্ট থেকে শুরু করে সকল ধরনের কাজ আমরা করেছি। অথচ আমাদের আজও ভাতা দেওয়া হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, নিয়োগবিধিতে আমাদের বঞ্চিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন পদোন্নতি বন্ধ আছে। বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করে পদোন্নতিকে আটকানোর একধরনের চক্রান্ত চলছে অধিদপ্তরে, মন্ত্রনালয়ে। অথচ আমাদের ডিপার্টমেন্টর বড় বড় কর্মকর্তাদের পদোন্নতি প্রতিবছরেই হচ্ছে। আমাদের এভাবে বঞ্চিত করে দেশ এগিয়ে নেওয়া খুব কঠিন। তাই আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে এই বিষয়ে নজর রাখার বিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছি।
জানা যায়, ক্যাডার নক্যাডার নিয়োগ বিধিমালা ২০২১ সহকারী শিক্ষকদের বিভাগীয় প্রার্থিতা ছাড়াই সচিব কমিটিতে পাশ হয়। এতে প্রধান শিক্ষকদের বিভাগীয় প্রার্থিতার সুযোগ থাকলেও বয়সের বাধা রাখা হয়েছে। অনেক প্রধান শিক্ষক মনে করেন এতে শুধু সহকারী শিক্ষক নয়, কৌশলে প্রধান শিক্ষকদেরও ঠকানো হয়েছে। তারা মনে করছেন ঐ বয়সে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণেরর সুযোগ থাকবে না আর থাকলেও প্রধান শিক্ষক শিশুদের সাথে থেকে তাদের মানুষ করতে গিয়ে বিভাগীয় প্রার্থিতায় ২% ও পাশ মার্ক তুলতে পারবেন না। আর এতেই শিক্ষকদের মধ্যে চরম হতাশা তৈরি হয়। তারা ফেসবুকসহ সব সামাজিক মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ বাংলাদেশ সহকারী শিক্ষক পরিষদ এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও সিনিয়র সহ. সভাপতি জসিম ব্যাপারী, সহ. সভাপতি রিগান আহম্মেদ, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারজানা আক্তার, সাইফুল ইসলাম সাইফ,এ আহম্মেদ রাজু সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
গোটা দেশের সাধারণ শিক্ষকদের কথা তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ জানান সহকারী শিক্ষকরা।