পিঠে অক্সিজেন সিলিন্ডার বেঁধে মোটরসাইকেলে শিক্ষিকা মাকে নিয়ে হাসপাতালে
করোনার বিস্তার রোধে চলমান ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ এ যানবাহন চলাচল বন্ধ। পাওয়া যায়নি অ্যাম্বুলেন্স। তাই শিক্ষিকা মাকে বাঁচাতে নিজের পিঠে অক্সিজেন সিলিন্ডার বেঁধে মোটরসাইকেলে করে নিয়ে হাসপাতালে ছুটছেন ছেলে।
শনিবার সন্ধ্যা থেকে এমন একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। ছবিটি বরিশাল-নলছিটি সড়কের বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে তোলা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অসুস্থ ওই শিক্ষিকার নাম রেহানা পারভিন। তার করোনা পজেটিভ। তিনি ঝালকাঠী জেলার নলছিটি পৌর শহরে থাকেন। আর তার ছেলে জিয়াউল হাসান কৃষি ব্যাংকের ঝালকাঠী শাখার কর্মকর্তা।
রেহানা পারভিনের বোনের ছেলে নাঈম হোসেন সাংবাদিকদের জানান, নলছিটি বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রেহানা পারভিন তার খালা। বয়স ৫৭ বছর। কয়েক দিন আগে তার শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা দেয়। নমুনা পরীক্ষার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নমুনা দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার তার করোনাভাইরাস পজেটিভ আসে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে বাড়িতেই আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল। অক্সিজেন লেভেল কমে আসায় সিলিন্ডারের মাধ্যমে অক্সিজেন দেয়া হয়। কিন্তু শনিবার বিকেলে তার তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।
ছেলে জিয়াউল হাসানের বরাত দিয়ে নাঈম জানান, লকডাউনের কারণে এমনিতেই সড়কে যানচলাচল খুবই সীমিত। আর রেহানা পারভিন করোনা আক্রান্ত হওয়ায় তাকে কেউ হাসপাতালে নিতে চাচ্ছিলেন না। কোথাও ফোন করে অ্যাম্বুলেন্সও পাওয়া যায়নি। এমন অবস্থায় তার শ্বাসকষ্ট আরও বেড়ে যায়। তাই তাকে মোটরসাইকেলে নিয়েই রওয়ানা হন ছেলে জিয়াউল হাসান।
জিয়াউল হাসান বলেন, তার মা যাতে পথে অক্সিজেনের অভাবে বেশি অসুস্থ হয়ে না পড়ে এজন্য তিনি পিঠের সাথে অক্সিজেন সিলিন্ডার বেঁধে নেন। তার মা অক্সিজেন মাস্ক পরা ছিলেন।
রেহানা পারভীনকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন তার বোনের ছেলে নাঈম হোসেন।
Comments are closed.