মেধাবী স্কুল ছাত্রী এমিলি আবারও স্কুলে যাবে
প্রধান শিক্ষকের তৎপরতায় বাল্যবিবাহের কবল থেকে রক্ষা পেল স্কুলছাত্রী
কালিনগর ফাসিয়াতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী এমিলি। এ যাত্রায় বিদ্যালয়ের সুযোগ্য প্রধান শিক্ষক জনাব সোহরাফ হোসেন কিরনের তৎপরতায় বাল্যবিবাহের অভিশাপ থেকে রেহাই পেল। এমিলি অত্র বিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগ থেকে ২০২১ সালের এস.এস.সি পরীক্ষার্থী। তার রোল নম্বর ৬। মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার পশ্চিম আলীপুর গ্রামের মোঃ মজিবার রহমান ও ইয়াসমিন বেগম দম্পতির কণ্যা সে।
অনেকদিন যাবৎ তার পিতা তাকে বিয়ে দেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। কিন্তু এমিলি থেমে থাকারা পাত্রী নয়। অদম্য আত্মপ্রত্যয় ও দৃঢ়তা নিয়ে সে রুখে দাঁড়ায়। পিতা তার কথায় কর্ণপাত না করলে এক পর্যায়ে স্কুলের বান্ধবীদের নিয়ে প্রধান শিক্ষক মহোদয়ের শরণাপন্ন হয়।
প্রধান শিক্ষক তার অভিভাবক মজিবার রহমানকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বাল্য বিবাহের কুফল এবং এমিলির উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা তুলে ধরে বিবাহ রহিত করার পরামর্শ দেন। কিন্তু কে শোনে ধর্মের কাহিনী। প্রধান শিক্ষকের কথা অগ্রাহ্য করে তিনি তার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। এতে এমিলি মানসিকভাবে ভেঙে পরে এবং ভবিষ্যত অন্ধকারাচ্ছন্ন জীবনের কথা চিন্তা করে স্কুল প্রাঙ্গণেই কান্না করতে থাকে।
বিয়ে প্রতিরোধের অন্য কোন উপায় না দেখে প্রধান শিক্ষক প্রশাসনের সাহায্য নেন। তিনি কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট বিবাহ বন্ধের লিখিত আবেদন জানান। ইউএনও স্যার বিষয়টি অবগত হয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেন। তিনি ঘটনাস্থলে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে প্রেরণ করে বিবাহ বন্ধ করেন। সেই সাথে এমিলির স্বপ্নযাত্রা নতুন করে শুরু হলো। এমিলিরা থেমে থাকার নয়, সমাজের প্রতিকূলতা ডিঙ্গিয়ে এভাবেই এমিলিরা এগিয়ে যাবে , তাদের স্বপ্নকে স্বার্থক করবে,সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে নিজের পরিচয়ে- এটাই প্রত্যাশা।
ধন্যবাদ আত্মপ্রত্যয়ী ও সাহসিকতার জ্বলন্ত অগ্নিকন্যা এমিলিকে এবং ধন্যবাদ জানাই বিদ্যালয়ের সুযোগ্য ও সমাজ সচেতন প্রধান শিক্ষক জনাব সোহরাফ হোসেন কিরনকে।
Kalinagar Fasiatala High School এর ফেসবুক পেজ থেকে সংবাদটি জানা যায়। প্রধান শিক্ষককে অনেকেই এজন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তার দুটি মন্তব্য তুলে ধরা হলো-
Santosh Halder:
ধন্যবাদ কালিনগর ফাসিয়াতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহোদয়কে।মেধবী কিশোরী ছাত্রী ভবিষ্যৎতের স্বপ্ন রক্ষার জন্য বাল্যবিবাহের হাত রক্ষা পেল। এমিলি সমাজের কলুষতার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ধন্যবাদ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে।
Ashok Roy:
স্বপ্নযাত্রার অগ্রপথিকেরা কোন বাঁধায় থেমে থাকে না। এমিলি আমাদের বিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্রী। প্রবল ইচ্ছাশক্তি ও দৃঢ় মনোবলে আত্মপ্রত্যয়ী এমিলি সমাজের কলুষতা থেকে নিজেকে রক্ষা করেছে, ধরে রেখেছে নিজের অভিযাত্রা। এমিলির সাহসিকতা অন্যান্য মেয়েদেরও উদ্ধুদ্ধ করবে। ধন্যবাদ এমিলিকে এবং প্রধান শিক্ষককে আন্তরিক ধন্যবাদ সঠিক সময়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য।
আমাদের ইনোভেটিভ ইডুকেশন পেজের পক্ষ থেকে প্রধান শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাই।
Comments are closed.