Take a fresh look at your lifestyle.

সহকারী প্রধান শিক্ষক পদ চাননা প্রাথমিকের শিক্ষকরা

528

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সহকারী প্রধান শিক্ষক পদ চাননা। তারা চান সহকারী থেকে সরাসরি প্রধান শিক্ষক পদে পদন্নতি। দৈনিক মুক্ত প্রভাতে এই বিষয়ে অনেক শিক্ষক মেইল, ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারে বার্তা পাঠিয়েছেন। এবং ফেসবুক পেইজের নিউজ লিংকে এবং সংবাদের কমেন্ট বক্সেও মন্তব্য লিখেছেন।

নাম প্রকাশ না করে এক শিক্ষকের মন্তব্য মুক্ত প্রভাতের পাঠকের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষকের আকুতি- আমরা সহকারি প্রধান শিক্ষক পদ চাইনা। আমরা চাই সহকারি শিক্ষক থেকে সরাসরি প্রধান শিক্ষকে পদন্নতি। এবং প্রধান শিক্ষকদের পরের গ্রেডে সহকারি শিক্ষকদের গ্রেড। আনি লক্ষ করে দেখুন চলতি দায়িত্ব নিয়ে প্রধান শিক্ষক পদে বছরের পর বছর রেখে দিচ্ছে। এই চলতি দায়িত্ব কাধে নিয়ে অনেকেই চাকরি জীবন শেষ করবেন। সহকারি প্রধান শিক্ষক পদ চালু হলে সহকারি শিক্ষক কোন দিনও প্রধান শিক্ষক পদে যেতে পারবে না। সহকারি প্রধান শিক্ষক পদেই তাদের চাকরি জীবন শেষ হবে।’

 

আরো এক শিক্ষকের দাবি-

‘বাচ্চাদের পড়াতে যে কষ্ট, কলেজ ইউনিভার্সিটি students দের পড়াতে সে রকম কষ্ট করতে হয় না । আমি এক সময় শিক্ষক ছিলাম আমি বুঝি কত ব্রেইন ছোটদের পিছনে অবচ্য় করতে হয়।

একজন শিক্ষক এই বেতন পেয়ে বাসা ভাড়া দিয়ে ছেলে মেয়ে মানুষ করা হিমশিম হয়ে যায়, পাশাপাশি তারা নিজে ও তার ছেলে মেয়েদের কোনো পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে পারে না , এতে করে তার energy recover হয় না এবং বাচ্চাদের কে তার সাধ্য অনুযায়ী পড়াতে পারে না।

এই জন্য আমি মনে করি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ও ভালো টিফিন স্কুলে সরকারি ভাবে ব্যবস্থা করা দরকার অথবা তাদের জন্য ভালো একটা amount প্রতিমাসে বরাদ্দের বেবস্থা করা দরকার। সরকার তেল কম ভাজা মচমচা চাইলে হবে না ।

বাংলাদেশ থেকে যেই টাকা পাচার হয় ও দুর্নীতি হয় তার ৫% প্রাথমিক শিক্ষদের পিছনে ব্যয় করলে মানসম্মত শিক্ষক ও মানসম্মত শিক্ষা ২ টাই পাওয়া যাবে।

পরিশেষে আমি বলবো প্রাথমিক শিক্ষকের বেতন বিসিএস A ক্যাটাগরি করেন দেখবেন কি রকম শিক্ষক এই লাইনে এসে ছাত্র ছাত্রী দের মেধাবী হিসাবে তৈরি করেন ।

কিছুদিন আগে আমার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক আবুল বারাকাত বলছিলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চেয়ে বেশি বেতন হওয়া প্রয়োজন।

একটা বিল্ডিং করতে গেলে শুরুতে ভালো টাকা খরচ করে base তৈরী করতে হয় এতে অনেক পরিশ্রম করতে হয় তেমনি ছাত্র ছাত্রী দের base টা প্রাথমিক শিক্ষকদের করতে তাদের অনেক কষ্ট ও পরিচর্যা করতে হয় তা না হলে উপরে উঠে তারা ভালো করতে পারে না ও তারা অকালে ঝরে পড়ে যায়। তাই এই শিক্ষকদের সরকারকে ভালো ভাবে বুঝতে হবে ও তাদের নায্য পাওনা সম্পর্কে আন্তরিক হতে হবে। ধন্যবাদ সবাইকে ।’

 

এর আগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে,  প্রথম ধাপে পাইলটিং হিসেবে ঢাকার পার্শ্ববর্তী দুটি উপজেলায় এ কার্যক্রম শুরু করা হবে। আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। 

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলি কার্যক্রম আগামী সপ্তাহ থেকে শুরু হচ্ছে ডিজিটাল পদ্ধতিতে।  প্রথম ধাপে পাইলটিং হিসেবে ঢাকার পার্শ্ববর্তী দুটি উপজেলায় এ কার্যক্রম শুরু করা হবে। আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

তিনটি দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের কাছে। শিক্ষকদের প্রাণের এই দাবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তুলে ধরেছেন শিক্ষক নেতা জাকির হোসাইন।

দাবিগুলো হলো- শতভাগ পদোন্নতি, প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেডে এবং সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ সৃষ্ট করে ১১তম গ্রেড প্রদান।

শিক্ষক নেতা জাকির হোসাইনের ফেসবুক পোস্টটি সোনালীনিউজের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-

বরাবর
মাননীয় প্রতিমন্ত্রী,
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

যথাযথ সম্মান পূর্বক নিবেদন করছি যে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় অধীনস্থ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের জন্য ঐতিহাসিক অবদানে আপনাকে জানাই কৃতজ্ঞতা, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

স্যার

আপনার মন্ত্রণালয়ের আন্তরিকতায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক গণ যা পেয়েছে তা নিঃসন্দেহেই প্রশংসনীয়।  আপনি দায়িত্ব থাকা অবস্থায়  আমাদের বিদ্যালয়ের সময় সূচি পরিবর্তন, নিয়োগ বিধি পরিবর্তন, অনলাইনে বদলী কার্যক্রম চলমান, উচ্চধাপে ফিক্সেশন,প্রধান শিক্ষকদের ১১ ও সহকারী শিক্ষকদের ১৩ তম পেয়েছি।

আপনি উপলব্ধি করছেন যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মানোন্নয়ন না করলে তাদের হাতে কোটি কোটি শিশু শিক্ষার্থীর মান সম্মত শিক্ষাদান অর্জন সম্ভব নয়,কারণ একমাত্র শিক্ষকের  আন্তরিকতায় পারে মান সম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে।

স্যার

অত্যন্ত বিনয়ের সাথে আপনাকে নিবেদন করছি যে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে অধিষ্ঠিত করতে কিছু কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও তা বাস্তবে পরিকল্পনায় আছে। প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজন সহকারী প্রধান শিক্ষক সৃষ্টির প্রক্রিয়া আজো চলমান, চলমান স্থির  আছে প্রধান শিক্ষক পদন্নোতি ১২ বছর যাবৎ। পদন্নোতিতে শত ভাগ সহকারী শিক্ষক পদন্নোতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি থাকলেও তা লিখিত আকারে অর্থাৎ গেজেট আকারে আইন সিদ্ধ প্রজ্ঞাপন  হয়নি।

হয়নি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন।  দ্বিতীয় শ্রেণির ঘোষণা করা হলেও দেওয়া হচ্ছে না দশম গ্রেডের মর্যাদা। উচ্চ আদালতে রায় পক্ষে এলেও আপীল আইলে আটকে রাখা হয়েছে দশম গ্রেড। চলা  থেমে আছে হাজার হাজার চলতি শিক্ষকের  পদোন্নতির চলা, ঝুলে আছে  আছে হাজার হাজার গ্রেডেশনের তালিকায় থাকা সহকারী শিক্ষক নাম, পাচ্ছে না পদোন্নতি।
মাননীয় মহোদয়,

পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ নেতা থাকলে যেমন জন্মায়নি একাধিক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো নেতা, তেমনি শত শত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় মন্ত্রীত্ব দায়িত্ব পালন করলেও পরিবর্তন করতে ঐতিহাসিক ভাবে দায়িত্ব পালন করেনা অনেকেই ,যা আপনার ও হাতে পরিবর্তন হয়েছে ও হওয়ার প্রক্রিয়ায় আছে।
স্যার

আমি বিশ্বাস করি আপনি ও আপনার আন্তরিকতা যে ভাবে প্রকাশিত হচ্ছে তাতে কেবল মাত্রই আপনার হাতে প্রাথমিক শিক্ষক পৌঁছাতে  পারে মর্যাদার আসনে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সম্মান ও মর্যাদা।

তাই আপনার মন্ত্রণালয়ের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রধান শিক্ষককে দশম গ্রেড, সহকারী প্রধান শিক্ষক সৃষ্টি ও সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডের বাস্তবায়ন। ঁবড় পদ থেকে যেমন ধফঢ়বড় হলে গ্রেডের পরিবর্তন হয় না,তেমনি সহকারী শিক্ষক থেকে সহকারী প্রধান  শিক্ষক পদোন্নতি পেলেও গ্রেডের পরিবর্তন দরকার নাই।
পিটিআই সংলগ্ন বিদ্যালয় গুলোতে একই কারিকুলামে চাকুরী করে দশম গ্রেড পেতে পারে তবে কেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের  সহকারী শিক্ষকদের ১১ তম গ্রেড পেতে পারেনা!

একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক স্টাফ একটি পর্ষদ,

এতে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ হিসেবে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদ হবে সৃষ্টি ও সহকারী শিক্ষকদের ১১ তম গ্রেড দিয়ে প্রধান ও সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে হবে গ্রেড বৈষম্য দূরীকরণ।

মাননীয় মহোদয়,  আমরা মামলায় আর মেলতে চাই না, আমরা আন্দোলনে নেমে পুলিশ পিটানি খেতে চাই না,আমরা চাই , আমরা বিশ্বাস করি আপনিই আমাদের একমাত্র অভিভাবক, আর আমরাও দাবীদার অভিভাবকের কাছে। সন্তান যেমন হাজার ভুল করে পিতার কাছে দাবীর হাত বাডিয়ে দেয়, তেমনি আপনার সন্তান তুল্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রাণের দাবী ও আপনার, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি প্রধান শিক্ষককে দশম গ্রেড ও সহকারী শিক্ষকদের এগারো তম গ্রেড দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী। আমরা শিক্ষক , শিক্ষক যেমন দেশ গঠনের কারিগর তেমনি সেই কারিগরকে আপনি আন্তরিক করার গঠনের  কারিগর আপনি। আমি শিক্ষক সমাজ পক্ষ থেকে কথা দিচ্ছি মানসম্মত শিক্ষাদানে শিক্ষকদের আন্তরিকতা অবিরত থাকবে, যা আগামী প্রজন্মের বিকাশ সাধনে এর বিকল্প কিছুই নাই।

পরিশেষে উপরে উল্লেখিত আলোচনাকে সদয় বিবেচনা  এনে আপনার কর্তব্য পালনে শিক্ষক পরিবারের অভিভাবক হয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আজীবন শিক্ষকের স্মৃতিতে লালিত শ্রদ্ধেয় ও ইতিহাসের পাতা স্বর্ণাক্ষরে উজ্জ্বল হয়ে থাকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বিনীত মর্জি হয়।
দাবীঃ
* শতভাগ পদোন্নতি।
*প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি দশম গ্রেডে,সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ সৃষ্ট করে সহকারী শিক্ষকদের এগারো তম গ্রেড দেওয়া।
*
নিবেদক
টি এম জাকির হোসেন
আক্কেলপুর, জয়পুরহাট।

source: muktoprovat

Comments are closed.