Customize Consent Preferences

We use cookies to help you navigate efficiently and perform certain functions. You will find detailed information about all cookies under each consent category below.

The cookies that are categorized as "Necessary" are stored on your browser as they are essential for enabling the basic functionalities of the site. ... 

Always Active

Necessary cookies are required to enable the basic features of this site, such as providing secure log-in or adjusting your consent preferences. These cookies do not store any personally identifiable data.

No cookies to display.

Functional cookies help perform certain functionalities like sharing the content of the website on social media platforms, collecting feedback, and other third-party features.

No cookies to display.

Analytical cookies are used to understand how visitors interact with the website. These cookies help provide information on metrics such as the number of visitors, bounce rate, traffic source, etc.

No cookies to display.

Performance cookies are used to understand and analyze the key performance indexes of the website which helps in delivering a better user experience for the visitors.

No cookies to display.

Advertisement cookies are used to provide visitors with customized advertisements based on the pages you visited previously and to analyze the effectiveness of the ad campaigns.

No cookies to display.

Take a fresh look at your lifestyle.

শিক্ষা সফর : নির্মল বিনোদন, জ্ঞান অর্জন, দেশপ্রেম জাগ্রত করার উপায় ।

368

শিক্ষা সফর: বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যার পরতে পরতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে সৌন্দর্য্য আর সৌন্দর্য্য। মায়ের কোমল আঁচল যেমন মমতার বন্ধনে আবদ্ধ করে রাখে আমাদের তেমনি এই বাংলা মায়ের কোলে রয়েছে চোখ ধাঁধানো রূপে ভরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য।

মুক্ত আকাশের নিচে কোথায়ও রয়েছে সমতুল ভুমি, কোথায়ও পাহাড় পর্বতে ঘেরা, সবুজে ঘেরা, প্রকৃতির মন মাতানো ঝর্ণাধারার প্রবাহমান জলকণার আঁকা বাঁকা গমন পথের সর্পিল এগিয়ে চলা, কোথাও বিশাল জলরাশির শান্ত-অশান্ত খেলা।

এমন রূপের বাহার না দেখে ঘরে বসে থাকা যায়না। থাকবো না আর বদ্ধ ঘরে স্লোগানের সাথে একাত্বতা ঘোষণা করে আমরা এ অপার মমতা-ময়ী বাংলা মাকে দেখার জন্য প্রতিবছরের ন্যায় ০৩/১০/২০১৯ তারিখে রওনা দিয়েছিলাম অজানাকে জানার ও দেখার মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন করার জন্য।

পরিচিত জগতের গন্ডিকে মারিয়ে অজানা-অচেনা-অপরিচিত জগতটাকে দেখার এক আকুলতা নিয়ে ঘর ছেড়েছিলাম নর্থ-বেঙ্গল টিচার্স ট্যুরিজম ক্লাবের উদ্দ্যেগে গুরুদাসপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার জনাব এস এম রফিকুল ইসলাম মহোদয়ের সাথে পুরো পার্বত্য অঞ্চল দর্শন লাভের প্রত্যাশায়।

ভ্রমনের আরবি শব্দ হলো সফর, ছায়ের, রেহলাত ইত্যাদি। আমরা আরও জানি, ইসলামের ৫ম স্তম্ভ হজ্জ শব্দের অর্থ ভ্রমন আবার ওমরাহ শব্দের অর্থও ভ্রমন। এ দৃষ্টিকোণ থেকে ভ্রমন ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকেও জায়েজ এবং আল্লাহর দেয়া একটি ইবাদতও বটে। ভ্রমন জ্ঞান-প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতার বাস্তব উৎস।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনের সুরা হজ্জ এর ৪৬ নং আয়াতে উল্লেখ করেছেন, “তারা দেশ ভ্রমন করে না? তা হলে তারা জ্ঞান-বুদ্ধি সম্পন্ন ও শ্রুতিশক্তি সম্পন্ন হতে পারত। বস্তুত চোখতো অন্ধ নয়, বরং অন্ধ হচ্ছে হৃদয়।”। আবার কুরআনের সুরা আনকাবুত এর ২০ নং আয়াতে উল্লেখ করেছেন, “ তোমরা পৃথিবী ভ্রমন করো এবং অনুধাবন করো, কীভাবে তিনি (আল্লাহ) সৃষ্টি করেছেন? অতঃপর আল্লাহ সৃজন করবেন পরবর্তী সৃষ্টি। আল্লাহতো সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।”

এছাড়া সুরা ইউসুফ, মুমিন, সাবা, ইমরান, আনআম, নমল, নাহল, কুরাইশ, মুমিন, রূম প্রভৃতি সুরাতে ভ্রমন করার বিষয়ে জোর তাগিদ দেয়া হয়েছে। ভ্রমন বা সফরের আরেকটি মূল উদ্দেশ্য হলো আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টি রহস্য অবলোকন করে জ্ঞানার্জন করা ও তার শক্তির প্রতি আনুগত্য প্রকট করা। শুধু ধর্মীয় স্থানগুলোই নয় আল্লাহর সকল সৃষ্টি দেখাই এই সফরকে সমর্থন করে।

ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় বিশ্বে যারা তাদের নাম যশকে স্বর্ণ অক্ষরে, মানুষের হৃদয়ের মনিকুঠায় স্থান করে নিতে পেরেছেন তাদের কথার দ্বারা, লেখার দ্বারা বা যে কোন কীর্তি দ্বারা তারা প্রত্যেকেই ছিলেন ভ্রমন পিপাসু। তারা দেশ হতে দেশান্তরে ঘুরে ফিরে মানব সভ্যতার ইতিহাস রচনায় অবদান রাখার পাশাপাশি বিশ্ব সাহিত্যের দরবারে ভ্রমন সাহিত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

ভ্রমন মানুষের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটায়, জ্ঞানের সকল বদ্ধ দড়জাকে উন্মুক্ত করে দেয়। অধিকাংশ লেখকদের যেমন কবি, সাহিত্যিক, ঐপন্যাসিক, গল্পকার, ছড়াকারদের জীবনী দেখলে বুঝা যায়, প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান সামান্য থাকলেও ভ্রমনজনিত কারণে তারা বিশ্ব দরবারে অনন্য উচ্চতায় নিজেদের তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। ভ্রমন মানুষকে অন্ধকারের কালো গহীন থেকে বের করে আনে, মনে আনে ‍মুক্তির স্বাদ।

বই পুস্তক থেকে যে জ্ঞান অর্জন করা হয় তার সাথে বাস্তবতার জ্ঞানের আকাশ পাতাল পার্থক্য। যেটা তিন বিঘা করিডর ভ্রমন করার পর প্রথম আবিষ্কার করতে পেরেছিলাম। নিজে বুঝার চেষ্টা করেছি, শিক্ষার্থীদের বুঝানোর চেষ্টা করেছি কিন্তু মনের কোণে কোথায় যেন অতৃপ্তি রয়ে গিয়েছিল, আমি বোধ হয় বিষয়টি ভালোভাবে তাদের হৃদয়ঙ্গম করাতে পারছি না।

চাক্ষুষ দেখার পর মনের অন্ধ জানালা যেন খুলে গিয়েছিল নিমিষেই। এ থেকে মূল উপলব্ধি ছিল জীবনের সাথে শিক্ষার যেমন সম্পর্ক রয়েছে তেমনি রয়েছে শিক্ষা সফরেরও। এটি মানুষের সৌন্দর্য্য ও জ্ঞান পিপাশাকে বর্ধিত করে। বিশাল পৃথিবীর অন্তহীন সৌন্দর্য্য ও রহস্যের সমুদ্রে ঝাপিয়ে পড়ার সুযোগ দান করে। জীবনে আনে বৈচিত্র, অভিজ্ঞতার একটা ঝুড়ি তৈরি করে মনে, দুর করে একঘেয়েমি।

স্যারের সুবাদে মুক্ত আকাশের নিচের প্রকৃতি, সবুজ শ্যামল বাংলার অপরূপ রূপ দেখতে পেরে আনন্দিত। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসের তিন তারিখে নাটোর থেকে রওনা হয়ে আমরা বঙ্গবন্ধু সেতু, হযরত বায়োজিদ বোস্তামী (রহঃ) এর মাজার, বাঁশখালি ইকো পার্ক, কক্সবাজারের রামু বৌদ্ধ বিহার, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে সুর্যাস্ত, সূর্য উদয়, সমূদ্র সৈকতের নৈসর্গিক দৃশ্য, চাঁদনি রাতে সমূদ্রের মায়াবী রূপ দর্শন, লোনা জলে ঢেউয়ের তালে তালে গোসল, বার্মিজ মার্কেট এ কেনাকাটা, টেকনাফের মাথিন কূপ, হিমছড়ি, ইনানী সি বীচ, বঙ্গোপসাগরের মন মাতানো মনোরম দৃশ্য, লামা আলী কদম, হাসিয়া খালি পর‌্যটন কেন্দ্র, বিভিন্ন স্থানের ঝর্ণাধারা, রাঙ্গামাটি জেলার সুউচ্চ পাহাড়ী শহর, বাজার, কাপ্তাই লেক, কর্ণফুলি নদীর প্রকৃতি, ঝুলন্ত সেতু, রাজবন বিহার, খাগড়াছড়ি শহর, আলুটিলা সুরঙ্গ পথ, সাজিক ভিলা প্রভৃতি দর্শন করি। এছাড়া রহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষের দেখা মেলে এ সফরের মাধ্যমেই।

এগুলোর বর্ণনা করা যে কতটা কঠিন তা বুঝলাম দেখার পর। ভেবেছিলাম যা কিছু দেখছি লিখে রাখব কিন্তু যেদিকে চোখ মেলি চোখ আটকে যায় একেরপর একেকটা দৃশ্যের আড়ালে। কলম ডায়রি বন্ধ করতে বাধ্য হই। একি অসম্ভব দৃশ্য দেখলো আখিযুগল? কখনই ভাবিনি আমার দেশ বাংলাদেশে এত সুন্দর, মায়াবী আঁচল পেতে বসে আছে। যেন মমতাময়ী মায়ের বাহুডোরের আলিঙ্গনের জাড়িয়ে রেখেছে এর সৌন্দর্য্য।

আমার দেখা সকল স্থানের বর্ণনাই আশা করি ধীরে ধীরে সবার সামনে নিয়ে আসবো। আপনি যদি কখনও এ স্থানগুলো দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন আমার বাংলাদেশ কত সুন্দরের আধার। এজন্য আমাদের উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মহোদয়কে (বর্তমানে তিনি অবসরে গেছেন) কোটিবার ধন্যবাদ দিলেও ধন্যবাদ দেয়ার আকাঙ্খা শেষ হবে না।

মূলত আমার ভ্রমনের (দীর্ঘ) সূচনাকারীই তিনি। কয়েক বছর ধরে বাংলার পথে প্রান্তরে যাবার সুযোগ হয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁকে বাঁচিয়ে রাখুন। আমরা যেন তাঁর সাথে আমার বাংলা মায়ের সবটুকু আঁচলে মুখ লুকাতে পারি। আল্লাহ আমাদের সকলকে দেশ ভ্রমনের সুযোগ দান করুন। আমীন।

বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়াকরণ দক্ষতা কী? প্রকিয়াসমূহ আলোচনা কর।

এটি এর আগে শিক্ষক বাতায়ন -এ প্রকাশিত।

Comments are closed.