ভারতের উত্তর প্রদেশের পাঠ্যসূচি থেকে বাদ পড়লেন রবীন্দ্রনাথ
আছেন আদিত্যনাথ–রামদেব
ভারতের উত্তর প্রদেশে দ্বাদশ শ্রেণির সিলেবাসে বেশ কিছু রদবদল করা হয়েছে। তাদের এই রদবদলের ফেরে সত্যিই ছুটি হয়ে গেল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যবই থেকে বাদ দেয়া হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা।
নতুন শিক্ষাবর্ষে ইংরেজির শিক্ষার জন্য ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং বা এনসিইআরটির সিলেবাস চালু করছে উত্তর প্রদেশ। নতুন এ সিলেবাসে শিক্ষার্থীদের জন্য পড়া খানিকটা কমানো হচ্ছে। সিলেবাস কমাতে গিয়ে বাদ দেয়া হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা। এত দিন ইংরেজি সিলেবাসে ছিল তাঁর ‘ছুটি’ গল্পটি। যার শিরোনাম ছিল ‘দ্য হোমকামিং’ নামে। কিন্তু এবার আর সেটি হচ্ছে না। আরও বাদ পড়েছে দেশটির সাবেক রাষ্ট্রপতি সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণণের প্রবন্ধ ‘দ্য উইমেনস এডুকেশন’।
এর আগে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য নির্বাচনীর সময় প্রচার করতে এসে বারবার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা আবৃত্তি করে মানুষের মন জয়ের চেষ্টা করেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এখন সেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিজেপি শাসিত ‘মডেল’ রাজ্যের সিলেবাস থেকে বাদ পড়ার পর নানা প্রশ্ন শুরু হয়েছে। পাঠ্যসূচিতে রবীন্দ্রনাথের লেখা বাদ পড়ায় তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ প্রকাশ করেছে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিন তার বক্তব্যে বলেন, ‘ওঁরা কোনো দিন বাঙালির ঐতিহ্য বোঝেনি। ওঁদের কাছ থেকে এহেন আচরণ প্রত্যাশিত। দেশের সংস্কৃতিও বোঝে না ওঁরা।’ তিনি বলেন, যদি যোগী আর রামদেব রবীন্দ্রনাথকে সরিয়ে দিতে পারে, তবে আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যতে তিনি আশার আলো দেখছেন না। তিনি আরও বলেন, এ কারণেই পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
বিতর্ক শুরু হয়েছে উত্তর প্রদেশ সরকারের সুপারিশে চৌধুরী চরণ সিংহ বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগের পাঠ্যক্রমে বাবা রামদেবের বই ‘যোগ চিকিৎসা রহস্য’ এবং প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ‘হঠযোগ স্বরূপ এবং সাধনা’ পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য। তার উপর দ্বাদশ ও দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচি থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রাধাকৃষ্ণণের লেখা বাদ পড়ায় নতুন করে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উদার মানসিকতার লেখকদের বাদ দিয়ে হিন্দুত্ববাদী রচনা ঢোকানো এখানকার সিলেবাসে। এটাই আসলে মগজধোলাই। এতে করে শিক্ষার্থীরা ছোটবেলা থেকেই হিন্দুত্ববাদী চেতনা নিয়ে বড় হবে। তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও এনডিটিভি
Comments are closed.