স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের বদলি ব্যবস্থাটি অনলাইনভিত্তিক করার কাজ শুরু করেছে সরকার। ইতোমধ্য শিক্ষকদের বদলির সফটওয়্যার প্রস্তুত হয়েছে। তবে, সরকার ঘোষিত লকডাউনের কারণে পুরোদমে অনলাইনে শিক্ষকদের বদলির কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। লকডাউন শেষ হলে শিক্ষকদের বদলির সফটওয়্যার পাইলটিং করতে চান অধিদপ্তরের কর্মকর্তরা। মাসখানেক পাইলটিংয়ের পর পুরোদমে অনলাইনে শিক্ষকদের বদলি শুরু হবে।
শুক্রবার (৪ জুন) দুপুরে সংবাদ মাধ্যমকে এ পরিকল্পনার কথা জানান প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বদলি বন্ধ আছে এক বছরের বেশি সময় ধরে। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের শুরুতে শিক্ষকদের বদলির আবেদন নেয়া হলেও করোনা ভাইরাসের মহামারীর কারণে তা নিষ্পত্তি করা হয়নি। বদলি নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও শিক্ষক নেতাদের বিরুদ্ধে তদবীর ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠায় সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি অনলাইনভিত্তিক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কিন্তু সে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সফটওয়্যার তৈরি হলেও তা পাইলটিং করে এখনো পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়নি। তাই শিক্ষকদের বদলি শুরু হচ্ছে না বলেসংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
মাঠ পর্যায়ের শিক্ষকরা সংবাদ মাধ্যমকে বলছেন, বদলি কার্যক্রম চালু না হওয়া শিক্ষকর ভোগান্তিতে পড়ছেন। গত একবছর ধরে বদলি বন্ধ। যেসব যোগ্য শিক্ষক নির্দিষ্ট সময় অপেক্ষার পর গতবছর বদলির আবেদন করেছিলেন তারাও বদলি হতে পারেননি। এ পরিস্থিতিতে দ্রুত শিক্ষকদের বদলি কার্যক্রম শুরু করার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
অধিদপ্তর সূত্রসংবাদ মাধ্যমকে জানান, ইতোমধ্যে শিক্ষকদের বদলির সফটওয়্যার প্রস্তুত হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে শিক্ষকদের অনলাইন বদলি কার্যক্রম শুরুর কথা ছিল। কিন্ত সফটওয়্যার জটিলতায় বদলি কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। পরে সফটওয়্যারটি পরিমার্জন করা হয়েছে। গত মার্চ মাসে সফটওয়্যারটি উদ্বোধন করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইল অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম সংবাদ মাধ্যমকে জানান, অনলাইনে সারাদেশের শিক্ষকদের বদলি শুরুর আগে একটি উপজেলায় পাইলটিং করার পরিকল্পনা ছিল। পাইলটিংয়ের প্রস্তুতিও শেষ হয়েছিল। নির্বাচিত উপজেলার শিক্ষকদের বদলির সফটওয়্যার নিয়ে ওরিয়েন্টেশন ও দেয়া হয়েছে। কিন্তু এপ্রিল মাসের শুরু থেকে করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার লকডাউন ঘোষণা করায় পাইলটিং শুরু করা যায়নি। লকডাউনের পর পাইলটিং শুরু করা হবে। সে পরিকল্পনাই করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রথমে একটি উপজেলায় আমরা পাইলটিং করবো। পাইলটিংয়ের মূল উদ্দেশ্য বদলির সফটওয়্যারটি ঠিকভাবে কাজ করছে কীনা তা যাচাই করা। পাইলটিং মাসখানেক চলবে। পাইলটিং শেষ হলে আমরা প্রথমে উপজেলা পর্যায়ের বদলি শুরু করবো। পর্যায়ক্রমে জেলা, বিভাগে অনলাইন আবেদনের মাধ্যমে শিক্ষকদের বদলির শুরু হবে। সেভাবেই পরিকল্পনা করা হয়েছে।
গতবছর যারা বদলির আবেদন করেছেন তারা বদলির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন কীনা জানতে চাইলে মহাপরিচালক বলেন, আগে শিক্ষকদের কাছ থেকে একটি নির্দিষ্ট সময়ে আবেদন নেয়া হতো। সে আবেদন ম্যানুয়ালি নেয়া হতো। আমরা সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি বদলে অনলাইনভিত্তিক করছি। তাই আগে ম্যানুয়ালি যারা হার্ডকপিতে আবেদন দিয়েছেন তা বিবেচনার সুযোগ নেই।- দৈনিকশিক্ষা
Comments are closed.